হজ ইসলামের একটি স্তম্ভ। আল্লাহ তাআলা সামর্থ্যবান ব্যক্তিদের ওপর হজ ফরজ করেছেন। বর্ণিত আছে ‘প্রত্যেক সামর্থ্যবান মানুষের ওপর আল্লাহর জন্য বায়তুল্লাহর হজ করা ফরজ।’ (সুরা : আলে ইমরান, আয়াত : ৯৭)
ইসলামে হজের গুরুত্ব অপরিসীম। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করিম (সা.)-কে জিজ্ঞেস করা হলো, সর্বাধিক উত্তম আমল কোনটি? তিনি বললেন, আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের উপর ইমান আনয়ন করা। আবার জিজ্ঞেস করা হলো, এরপর কোনটি? তিনি বললেন, আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করা। আবার জিজ্ঞেস করা হলো, তারপর কোনটি? তিনি বললেন, হজে মাবরুর বা মকবুল হজ আদায় করা।’ (বুখারি শরিফ, হাদিস : ১৪২৯)
হাজিগণ আল্লাহর মেহমান। রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন, ‘হজ ও ওমরাহকারীরা হচ্ছেন আল্লাহর দাওয়াতি যাত্রীদল। যদি তাঁরা আল্লাহর নিকট দোয়া করেন, তিনি তা কবুল করেন। আর যদি তাঁরা তাঁর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেন, তাহলে তিনি তাঁদের ক্ষমা করে দেন।’ (মিশকাত শরিফ, হাদিস : ২৫৩৬)
কার উপর হজ ফরজ?
হজ ফরজ হওয়ার জন্য পাঁচটি শর্ত রয়েছে।
- মুসলিম হওয়া।
- আকল থাকা—অর্থাৎ বিবেকবান হওয়া, পাগল না হওয়া
- বালেগ হওয়া, প্রাপ্তবয়স্ক হওয়া।
- আজাদ বা স্বাধীন হওয়া—অর্থাৎ কারো গোলাম বা দাস না হওয়া।
- দৈহিক ও আর্থিকভাবে সামর্থ্যবান হওয়া।সামর্থবান বলতে দৈনন্দিন খরচ বাদে হজ্বে আবশ্যকীয় প্রয়োজনে যে পরিমাণ টাকা প্রয়োজন তথা যাওয়া আসা, সেখানে থাকা খাওয়া ইত্যাদি পরিমাণ টাকা থাকলে ব্যক্তির উপর হজ্ব করা ফরজ হয়ে থাকে। সে হিসেবে দেখতে হবে বর্তমানে হজ্ব করতে গেলে কত টাকা লাগবে। সে টাকা উক্ত ব্যক্তির কাছে থাকলে তার উপর হজ্ব করা আবশ্যক।
স্মরণ রাখতে হবে যে কারো ওপর জাকাত ফরজ না হয়েও তার ওপর হজ ফরজ হতে পারে। কেননা হজ ও জাকাতের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। হজ ও জাকাতের মধ্যে পার্থক্য হলো জাকাতের সম্পর্ক নির্ধারিত নিসাবের সঙ্গে আর হজের সম্পর্ক মক্কায় আসা-যাওয়ার খরচের সঙ্গে। সুতরাং স্থাবর সম্পত্তির কিছু অংশ বিক্রি করে কেউ যদি হজ করতে সক্ষম হয় এবং হজ থেকে ফিরে এসে বাকি সম্পত্তি দিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতে পারে, তাহলে তার ওপর হজ ফরজ। (ইমদাদুল আহকাম : ২/১৫২; আহসানুল ফাতাওয়া : ৪/৫১৬)
একইভাবে ব্যবসায়ীর দোকানে যে পরিমাণ পণ্য আছে, কিছু অংশ বিক্রি করে যদি হজ করা সম্ভব হয় এবং ফিরে এসে যদি বাকি পণ্য দিয়ে জীবিকা নির্বাহ করা যায়, তাহলে তার ওপরও হজ ফরজ। (ইমদাদুল আহকাম : ২/১৫৩)